ইসলামিক পুঁজিবাদ ও অর্থনীতির মধ্যে প্রধান মিল ও অমিলগুলো কী কী?

Sourastra Das
2 min readAug 17, 2021

--

আমি অর্থনীতি এমনকি ব্যবসায় শাখার ছাত্রও নই তবে অনেক আন্তর্জাতিক অর্থনীতি বই পড়েছি" আর ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা বই পড়ে যেটুকু জেনেছি সেটুকুই উল্লেখ করছি এখানে।পুঁজিবাদ হলো ধনতান্ত্রিক অর্থব্যবস্হা আর ইসলামি অর্থব্যবস্হা হলো শরিয়তের ওপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত অর্থব্যবস্হা।

প্রথমে আসা যাক মিলগুলোতে

পুঁজিবাদ আর ইসলামি অর্থব্যবস্হার সবচেয়ে বড় মিল রয়েছে সম্পদের মালিকানার ক্ষেত্রে। অর্থাৎ এখানে উভয়ক্ষেত্রেই সম্পদ ব্যক্তিমালিকানাধীন। উভয় অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় ব্যক্তি যতটুকু পারেন সম্পদ অর্জন করতে পারবেন এবং এর বন্টন ব্যবস্থা মালিকের হাতেই থাকবে। কমিউনিস্ট সমাজতান্ত্রিক অর্থব্যবস্হা এর পুরোই বিপরীত। এর জন্য অনেক আন্তর্জাতিক কমিউনিস্টরা ইসলাম কে ইসলামিক ফ্যাসিবাদ বলে থাকে।

পুঁজিবাদ আর ইসলামি অর্থব্যবস্হায় মুনাফা গ্রহণের ক্ষেত্রে বৈধতা রয়েছে।

পুঁজিবাদ অর্থনৈতিক ব্যবস্হায় ও ইসলামি অর্থব্যবস্হায় শ্রমিকের মজুরি নির্ধারণের অধিকার মালিক শ্রেণীর হাতে।

এবার অমিলগুলো হলো —

পুঁজিবাদ অর্থনীতিতে মালিকশ্রেণী তার ইচ্ছামতো সুদ নিজের আওতায় রাখতে পারবে। কিন্তু ইসলামি অর্থনৈতিক ব্যবস্থাতে এই সুবিধা নেই। কারণ ইসলামি অর্থনীতিতে সুদ জিনিসটাই হারাম। হাদিসে রয়েছে —

গ্রন্থঃ সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
অধ্যায়ঃ ৩৪/ ক্রয়-বিক্রয় (كتاب البيوع)
হাদিস নম্বরঃ ২০৮৩

৩৪/২৩. আল্লাহ তা‘আলার বাণীঃ

(يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لاَ تَأْكُلُوا الرِّبَا أَضْعَافًا مُضَاعَفَةً وَاتَّقُوا اللهَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ)

‘‘হে মু’মিনগণ! তোমরা চক্রবৃদ্ধিহারে সুদ গ্রহণ করো না এ ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় কর তবে সফলতা অর্জন করতে পারবে।’’ (আলু ইমরানঃ ১৩০)

২০৮৩. আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মানুষের উপর এমন এক যুগ অবশ্যই আসবে যখন মানুষ পরোয়া করবে না যে কিভাবে সে মাল অর্জন করল হালাল উপায়ে না হারাম উপায়ে। (২০৫৯) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৯৩৮ , ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১৯৫৩)

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

“আল্লাহ সুদকে হারাম করেছেন আর ব্যবসাকে হালাল করেছেন।”

পুঁজিবাদ অর্থনীতিতে মালিক শ্রমিকের মজুরি প্রাপ্য থেকে কম দিতে পারেন। অর্থাৎ মুনাফার যেটুকু অংশ শ্রমিকের হিসেবমতো প্রাপ্য সেটার চেয়ে কম মজুরি দেয়ার অধিকার রয়েছে মালিকের। অপরদিকে ইসলামি অর্থনীতিতে এরকম কাজ নীতি গর্হিত। শ্রমিককে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তার মজুরি প্রদান করতে হবে।হাদিসে রয়েছে —

“শ্রমিকের গায়ের ঘাম শুকাবার পূর্বেই তার মজুরি আদায় করো।”

পুঁজিবাদ অর্থনীতিতে মালিক শ্রেণী সম্পদ পুঞ্জিভূত করে রাখতে পারেন এবং তা হতে প্রাপ্ত লভ্যাংশ অন্যক্ষেত্রে বিনিয়োগ করতে পারবেন। কিন্তু ইসলামিক অর্থনীতির ও স্তম্ভের অন্যতম বৈশিষ্ট্য যাকাত যেটা সম্পদ পুঞ্জিভূত করে রাখার বিরুদ্ধে যায়। পুরো একবছরে নিসাব পরিমাণ সম্পদের অধিকারী প্রত্যেক নারী-পুরুষকে বছরান্তে ২.৫০% যাকাত নির্দিষ্ট খাতে ব্যয় করতে হয়।

পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় সুদ গ্রহণের ক্ষেত্রে বৈধতা রয়েছে কিন্তু ইসলামি অর্থব্যবস্হায় সুদ নয় মুনাফা গ্রহণে বাধ্যবাধকতা রয়েছে। অর্থাৎ আপনার অর্থের ওপর যে পরিমাণ লাভ বা ক্ষতিই আসুক না কেন সেটা আপনার দায়িত্ব। এক কথায় ইসলামিক পুঁজিবাদ চোরের উপর বাটপারি….!

Sign up to discover human stories that deepen your understanding of the world.

Free

Distraction-free reading. No ads.

Organize your knowledge with lists and highlights.

Tell your story. Find your audience.

Membership

Read member-only stories

Support writers you read most

Earn money for your writing

Listen to audio narrations

Read offline with the Medium app

--

--

Sourastra Das
Sourastra Das

Written by Sourastra Das

Indian rationalist atheist Journalist photographer

No responses yet

Write a response